Translate

মঙ্গলবার, ৯ অক্টোবর, ২০১২

ঈদের টিপস


 

কোন অংশের মাংস দিয়ে কী রান্না করবেন?

সব গোশত দিয়ে সব ধরনের আইটেম তৈরি করা যায় না। তাই রান্নার আগে তাকে ওই গোশত সম্পর্কে সচেতন হয়ে রান্না শুরু করতে হবে। এবার জেনে নিন কোন অংশের গোশত দিয়ে কি কি তৈরি করা যাবে।
রানের গোশতঃ কোরমা, টিকিয়া, বিফ বার্গার, কোপতা, বিরিয়ানি ইত্যাদি তৈরি করা যাবে।
পেটের দু’পাশের গোশতঃ  শিক কাবাব, হাঁড়ি কাবাব, কিমা, কোপ্তা, শামি কাবাব তৈরি করা যায়।
হাঁটু থেকে পায়ের অংশ পর্যন্তঃ স্যুপ ও কারির জন্যে ভালো।
সিনার গোশতঃ  তেহারি, কারি, রোস্ট ও কোমরের গোশত দিয় রোস্ট, কোরমা, বিরিয়ানি তৈরি করা যাবে।
গোশত তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হতে পেঁপে দিতে পারেন অথবা তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হওয়ার জন্য ব্যবহার করতে পারেন সামান্য চিনি।
গোশতের টেস্ট গোশত কষানোর ওপর নির্ভর করে। গোশত কষানোর পর পানি দিয়ে ফুটিয়ে ঢেকে আঁচ মধ্যম করে দিন। আস্তে আস্তে গোশত সিদ্ধ হয়ে আসবে।
গোশত রান্নার সময় ঢেকে রান্না করবেন এতে খাবারের মান ভালো থাকে। এছাড়া গোশতও তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়ে যায়।

গোশত বুঝে আলু দেবেন। দেশী মুরগি, গরু ও খাসির গোশত যদি ফার্মের হয় তবে একসঙ্গে দিয়েই কষাতে পারবেন। এতে কোন অসুবিধা হবে না।
ফার্মের মুরগির গোশত খুব নরম তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়ে যায়। কয়েকবার গরম করা হলে একেবারেই খুলে যায়। তাই এর থেকে রক্ষা পেতে চাইলে রান্নার আগে একটু লবণ ও হলুদ মিশিয়ে তেলে হালকা করে ভেজে নেবেন। তাহলে আর গোশতের আঁশ খুলে যাবে না।


চর্বি ছাড়া মাংস খান

কোরবানি ঈদে মাংস তো খাওয়া হবেই। খাওয়া না কমিয়ে যদি কাটা ও রান্নার মাধ্যমেই কমিয়ে ফেলা যায় চর্বির ভাগটা! কীভাবে? জানিয়েছেন রান্নাবিদ রাহিমা সুলতানা রিতা।
সাধারণত মাংস কাটা হয় কিউব আকারে। এভাবে কাটলে মাংসের মধ্যে চর্বির স্তরগুলো থেকেই যায়। এ জন্য মাংসের টুকরাগুলো স্তরে স্তরে কেটে চর্বির অংশটুকু বাদ দিন। সিনা, রান যেকোনো অংশ থেকেই এভাবে চর্বি বাদ দিয়ে শুধু লাল মাংসটুকু রাখা যেতে পারে।
যাদের কোলেস্টেরলে সমস্যা রয়েছে, তাঁরা মাংস প্রথমে সেদ্ধ করে পানিটুকু ফেলে দিন। এরপর ইচ্ছামাফিক রান্না করুন। এতেও চলে যাবে অনেকখানি চর্বি।
গ্রিল করা মাংসে চর্বি প্রায় থাকেই না বলা যায়। রোস্ট বা অন্য কোনোভাবে রান্না না করে তাই গ্রিল খাওয়া অনেক স্বাস্থ্যকর।
সাদা সিরকা, লেবুর রস ও লবণ মাখিয়ে কাঁচা মাংস ভিজিয়ে রাখুন সারা রাত। এভাবে রাখলে মাংসের প্রায় ৮০ শতাংশই চর্বিই চলে যায়। এরপর তা সংরক্ষণ করা যেতে পারে অথবা রান্না করতে পারেন আপনার পছন্দমতো।

কোরবানির পশুর হাট

কদিন বাদেই কোরবানির ঈদ। তাই শুরু হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। তারই ধারাবাহিকতায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বসেছে পশুর হাট। গত কয়েক বছরের মতো এবারও হাটে গরু-ছাগলের পাশাপাশি উটও উঠেছে। এ প্রতিবেদনে কোরবানির পশুর হাটবিষয়ক তথ্যাদি উপস্থাপন করা হলো।

গত বছর রাজধানীতে ১৩টি পশুর হাট বসলেও এবার ১২টি বসেছে বলে জানিয়েছে ঢাকা সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুর রহমান। তিনি জানান, এবার পশুর হাটে ১০০ টাকায় পাঁচ টাকা হারে হাসিল ধরা হয়েছে।
আসন্ন কোরবানি ঈদ উপলক্ষে ঢাকা শহরের পশুর হাটগুলোয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও গরু-ছাগলের বেপারিদের নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রতি হাটে থাকছে একটি পুলিশ নিয়ন্ত্রণকক্ষ। হাট তদারকির জন্য কাজ করছে একটি ভ্রাম্যমান দল। আর ঢাকা শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
এবার ঈদ উপলক্ষে ঢাকা শহরের যেসব স্থানে অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট বসেছে, সেগুলোর ঠিকানা নিচে দেওয়া হলো-
আরমানিটোলা খেলার মাঠ ও পার্শ্ববর্তী চিত্রামহলসংলগ্ন ঢাকা সিটি করপোরেশনের খালি জায়গা, ঝিগাতলা হাজারীবাগ মাঠ, হোসেনী দালান রোড (চানখাঁরপুল চৌরাস্তা থেকে বকশীবাজার ট্রাফিক সিগন্যাল পর্যন্ত), গোপীবাগ ব্রাদার্স ইউনিয়নসংলগ্ন বালুর মাঠ, উত্তরা আজমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ ও রাজউকের খালি জায়গা, খিলগাঁও মেরাদিয়া বাজার, তালতলা বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশের খালি জায়গা, আগারগাঁও বস্তির খালি জায়গা বেতার ভবনের পশ্চিমে, পোস্তগোলা আলম মার্কেটের সামনের রাস্তার পূর্বপাশে ব্রিজসংলগ্ন খালি জায়গা, ৮৫ নম্বর ওয়ার্ডের আউটফল স্টাফ কোয়ার্টারের দক্ষিণ পাশে ঢাকা সিটি করপোরেশনের খালি জায়গা, লালবাগের রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ এবং সূত্রাপুরের ধূপখোলা খেলার মাঠ। তা ছাড়া রয়েছে গাবতলীর নিয়মিত গরুর হাট।


পশুর চামড়া ছাড়াতে যত্ন চাই

বছর ঘুরে আবারও এল কোরবানির ঈদ। মানুষ কোরবানির পশু বেচাকেনায় ব্যস্ত। প্রতিবছর কোরবানির পর পশুর চামড়া রক্ষণাবেক্ষণ ও বেচাকেনা নিয়ে আপনি পড়েন নানা ঝামেলায়। অথচ কোরবানির আগে ও পরে কিছু বিষয়ের প্রতি যদি লক্ষ রাখেন, তাহলে এই ঝামেলা এড়িয়ে যাওয়া যায় সহজেই। সেই সঙ্গে বেড়ে যায় আপনার দানকৃত চামড়ার বিক্রির টাকার পরিমাণ। পশু চামড়ার গুণগত মানের ওপর নির্ভর করে আমাদের দেশে চামড়া ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত আট ভাগে চামড়ার মান মূল্যায়ন করে থাকে। ‘এ’ ভাগকে সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করে সর্বনি্ন মূল্যায়ন করা হয় এইচ ভাগকে। কীভাবে রক্ষা করবেন আপনার কোরবানির পশুর চামড়ার মান, এবার এ নিয়েই থাকছে কিছু টিপস। আর এসব টিপস দিয়ে সহায়তা করেছেন ল্যান্ডমার্ক ফুটওয়্যার লিমিটেডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন লিটন ও আবু রায়হান শরিফ।
চামড়ার মান রক্ষা
সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে চামড়ার ক্ষতি ও গুণগত মান নষ্ট হয়ে থাকে। ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে পশুর চামড়াকে রক্ষা করতে বর্তমান বিশ্বে সাধারণত ড্রাই ট্রিটমেন্ট, সল্ট ট্রিটমেন্ট ও ফ্রিজিং করে চামড়া সংরক্ষণ করা হয়। উন্নত দেশগুলোতে চামড়া সংরক্ষণে ড্রাই ট্রিটমেন্ট ও ফ্রিজিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হলেও তা ব্যয় ও সময়সাপেক্ষ বলে আমাদের দেশে সল্ট ট্রিটমেন্ট বা লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করা হয়। কোরবানির আগে ও পরে কিছু বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখলেই অতিসহজে চামড়ার গুণগত মান রক্ষা করতে পারবেন।
কোরবানির আগেঃ অনেকেরই ধারণা, কোরবানির গরুটির গায়ের রঙের ওপরই হয়তো নির্ভর করে এর চামড়ার দাম। আর তাই কালো অথবা লাল গরুটির দাম কিছুটা চড়িয়েই হাঁকেন বিক্রেতা।
* পশু কেনার সময় লক্ষ রাখতে হবে, আগে থেকেই গরুর চামড়ায় কোনো গভীর ক্ষতচিহ্ন বা দাগ যেন না থাকে।
* কোরবানির অনেক আগেভাগেই যদি পশু কিনে থাকেন তাহলে পশুর বাসস্থান হিসেবে এমন কোনো স্থান নির্বাচন করুন যেখানে পশুর গায়ে আঁচড় বা ক্ষত হবে না। পশুর থাকার জায়গায় খড় বা চট বিছিয়ে দিন।
* পশু বাঁধা ও কোরবানির কাজে পাটের রশি ব্যবহার করুন। নাইলন বা প্লাস্টিকের দড়ি, লোহার শিকল পরিহার করুন।
ঈদের দিন সকাল থেকেই পশুকে শক্ত খাবার (খড়, ভুসি, কাঁচা ঘাস ইত্যাদি) দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। বেশি করে পরিষ্কার পানি, ভাতের মাড় ইত্যাদি তরল খাবার খাওয়াতে পারেন। এতে কোরবানির পর পশুর চামড়া ছাড়ানো অনেক সহজ হবে।
* পশু কোরবানির স্থান হিসেবে সমতল জায়গা বেছে নিন। এ ক্ষেত্রে এবড়োথেবড়ো রাস্তা ও কংক্রিটের মেঝে পরিহার করুন।
* কোরবানির কাজে অপেক্ষাকৃত দক্ষ লোক ঠিক করতে হবে। আনাড়ি লোক দিয়ে চামড়া ছাড়াতে গেলে চামড়া কেটে যেতে পারে।
* কোরবানির জন্য শোয়ানো অবস্থায় পশুটিকে যেন টানাহেঁচড়া না করা হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
* কোরবানির পশু জবাই করার কাজে বড় ও চামড়া ছাড়ানোর কাজে ধারালো মাথা ভোঁতা ছুরি ব্যবহার করতে হবে।
* কোরবানির কাজে ব্যবহৃত বাঁশ বা লাঠি যেন মসৃণ হয় সেদিকে লক্ষ রাখা জরুরি।
* সঠিক নিয়মে কোরবানির পশু শোয়ানো হলে সাধারণত চামড়া অক্ষত থাকে।
কোরবানির পরেঃ কোরবানির চামড়ার গ্রেডিং ঠিক রাখতে হলে কোরবানির পর চামড়া ছাড়ানোর জন্য কিছু নির্দিষ্ট দিকে লক্ষ রাখা উচিত। এ ছাড়া চামড়া ছাড়ানোর পরে হাতেগোনা কিছু আনুষঙ্গিক কাজ করলে চামড়ার মান অক্ষুন্ন থাকে।
* চামড়া ছাড়ানোর সময় তাড়াহুড়ো করা ঠিক নয়। কোরবানি ও চামড়া ছাড়ানোর কাজ অভিজ্ঞ লোকজন দিয়ে করুন।
* চামড়া ছাড়ানোর পর দ্রত চামড়ায় লেগে থাকা রক্ত, চর্বি ও মাংসকণা সরিয়ে ফেলতে হবে। কেননা রক্ত-মাংস লেগে থাকা চামড়ায় ব্যাকটেরিয়া দ্রুত আক্রমণ করতে পারে।
* চামড়া এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেওয়ার সময় টেনেহিঁচড়ে নেবেন না। চামড়া যানবাহনে তোলার সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন।
* চামড়া দ্রুত বিক্রি করতে না চাইলে লবণ দিয়ে চামড়াটি ছড়িয়ে রাখতে হবে।
* সাধারণত চামড়ায় ওজনের ২০ শতাংশ হারে লবণ ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ একটি মাঝারি আকারের গরুর চামড়ার ওজন ১৫ থেকে ২০ কেজি হলে লবণ ব্যবহার করতে হবে তিন থেকে চার কেজি।
* প্রতিবছর কোরবানির আগে ‘বাংলাদেশ লেদার ম্যানুফ্যাকচার অ্যান্ড গুডস অ্যাসোসিয়েশন’ চামড়া কেনার একটি নির্দিষ্ট দাম ঘোষণা করে। সেদিকে লক্ষ রাখলে চামড়া ক্রয়-বিক্রয় করার সময় লোকসান হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমে যায়।
* ঢাকার বাইরে থেকে চামড়া এনে বিক্রি করতে হলে অবশ্যই সল্ট ট্রিটমেন্ট (লবণ ব্যবহার) করে আনতে হবে।
* চামড়াকে পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে নেপথলিন ব্যবহার করা যেতে পারে।
উপরোল্লিখিত টিপস সঠিকভাবে মেনে চললে চামড়ার গুণগত মান যেমন থাকবে, তেমনই প্রত্যাশিতভাবে পাওয়া যাবে চামড়ার দাম। সেই সঙ্গে উন্নত হবে দেশের চামড়া শিল্প। কেননা আমাদের দেশের ট্যানারিগুলো তাদের সারা বছরের প্রয়োজনীয় চামড়ার ৮০ শতাংশ সংগ্রহ করে থাকে কোরবানির ঈদের সময়।

মাংসের সঠিক সংরক্ষণ পদ্ধতি

কোরবানির ঈদে মাংসের সরবরাহ থাকে প্রচুর। তৈরি করা যায় বিভিন্ন স্বাদের ও বিভিন্ন ঢঙের মাংসের আইটেম। মাংস প্রাণিজ প্রোটিনের খুব ভালো উৎস। কাজেই সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে পারলে কোরবানির ঈদের পর্যাপ্ত মাংস দিয়ে কাটিয়ে দেওয়া যাবে নির্দ্বিধায় দুই মাস।
ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টারের পুষ্টিবিজ্ঞানী সৈয়দা শারমিন আখতার মাংস সংরক্ষণের বিষয়ে বলেন, সংরক্ষণের সময় সর্বপ্রথম মনে রাখতে হবে ঠিকমতো তা প্যাকিং হয়েছে কি না। হাড়সহ মাংস, হাড় ছাড়া মাংস, চর্বিসহ মাংস, চর্বি ছাড়া মাংস-এই প্রতিটি প্যাক হবে আলাদা। এরপর এই পলিথিনের প্যাকেটগুলো ডিপ ফ্রিজে (শূন্যের নিচে তাপমাত্রায়) রাখতে হবে। মাংস সংরক্ষণের আরও একটি পদ্ধতি হলো হালকা লবণ ও হলুদ দিয়ে মাংসগুলোকে তাপ দিলে তা অনেক দিন সাধারণ তাপমাত্রায়ই রাখা যায়। আবার ভিনেগার দিয়েও মাংস সংরক্ষণ করা যায়। কোনো টিন বা বোতলে ভিনেগারে মাংস সম্পূর্ণভাবে ডুবিয়ে রাখলে মাংস ভালো থাকে অনেক দিন। আর ভিনেগার যদি না পাওয়া যায়, তাহলে তার বদলে লেবুর রস ব্যবহার করা যেতে পারে। মাংসের টুকরোগুলোকে লেবুর রস দিয়ে মাখিয়ে ক্যানড করলে মাংস ভালো থাকে অনেক দিন। ভিনেগার বা লেবুর রস ব্যবহার করলে মাংস সংরক্ষণের পাত্রটি ডিপ ফ্রিজে না রেখে রেফ্রিজারেটরে সাধারণ তাপমাত্রায় রাখতে হবে। মাংস সংরক্ষণের সবচেয়ে আদি পদ্ধতি হলো মাংস রোদে শুকিয়ে নেওয়া। হালকা লবণ দিয়ে মাখিয়ে নিয়ে রোদে ভালোভাবে শুকালে এই মাংস ভালো থাকে অনেক দিন। তবে শুকানোর পর অবশ্যই মাংসগুলো টিনে ভালো করে এঁটে রাখতে হবে, নয়তো পোকামাকড়ের আক্রমণে তার আবার পুষ্টি অপচয় হবে।


কোরবানি ঈদের টিপস

কোরবানির ঈদে আনন্দের পাশাপাশি থাকে কিছু বাড়তি দায়িত্ব। যেমন-পশু কেনা, কোরবানি দেওয়া, ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করাসহ নানা ঝামেলা। কিছু বিষয় আগে থেকে জানা থাকলে এসব ঝামেলার অনেকটাই এড়ানো যায় সহজে। তাই আপনাদের জন্য থাকছে বেশ কিছু কার্যকর টিপস। পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি অধিদপ্তরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা· আবদুল বাকী।
* কোরবানির পশু কিনতে যাওয়ার সময় পশু বিষয়ে অভিজ্ঞ কাউকে সঙ্গে নিতে পারলে ভালো, তিনি পশু চিনে কিনতে পারেন।
* হাট থেকে পশু বাড়িতে আনার জন্য একজন শক্তসমর্থ লোককে সঙ্গে নিন, যিনি পশু বাড়িতে আনতে সাহায্য করতে পারবেন।
* হাটে যাওয়ার সময় টাকা-পয়সা সাবধানে রাখবেন।
* পশু কিনতে যাওয়ার সময় ভালো পোশাক না পরাই ভালো। দাগ বা ময়লা লাগার আশঙ্কাই বেশি।
* হাতে সময় নিয়ে পশুর হাটে যাওয়া উচিত। এতে ধীরেসুস্থে, দেখেশুনে পশু কিনতে পারবেন।
* খাজনার (হাসিল) হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য হাটের বাইরে থেকে পশু কিনবেন না। এতে লাভবান হওয়ার চেয়ে চোরাই পশু কেনার আশঙ্কা থাকে বেশি।
* হাটের খাজনা ঠিকমতো পরিশোধ করুন।
* পশুর বয়স সম্পর্কে জেনে নিন। কেননা গরু দুই বছর এবং ছাগলের ন্যূনতম বয়স ছয় মাস না হলে কোরবানি আদায় হবে না।
* বাহ্যিকভাবে দেখতে সুস্থ-সবল, নীরোগ পশু কিনুন। রোগবালাই আছে কি না দেখে নিন।
* চামড়ায় কাটা ক্ষত দেখে নিতে হবে। দেখতে হবে কান কাটা, শিং ভাঙা, লেজ কাটা, খুরের মধ্যে ক্ষত বা জিহ্বায় ঘা আছে কি না।
* পশুর মুখের সামনে খাবার ধরলে যদি জিহ্বা দিয়ে টেনে নেয় এবং নাকের ওপরটা ভেজা ভেজা থাকে তাহলে বুঝতে হবে গরু সুস্থ। অসুস্থ পশু খাবার খেতে চায় না।
* গাভি বা বকনা গরু না কেনাই ভালো। নিতান্তই কিনতে হলে পশুচিকিৎসকের মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে পশুটি গর্ভবতী কি না। গর্ভবতী পশু কোরবানি হয় না।
* গরুর কুঁজ মোটা টানটান হলে গরু সতেজ, সুস্থ হয়।
* পশু কিনেই হাট থেকে পশুর জন্য খাবার কিনে ফেলুন।
* হাট থেকে পশু আনার সময় পাটের দড়ি দিয়ে পশুকে ভালোভাবে বেঁধে আনুন। না হলে পশু গাড়ির শব্দে ভয় পেয়ে দৌড় দিতে পারে।
* কোরবানির আগেই কসাই ঠিক করে রাখুন, না হলে ঝামেলা পোহাতে হতে পারে।
* মাংস কেটে রাখার জন্য পরিষ্কার চাটাই সংগ্রহে রাখুন।
* কোরবানিতে ব্যবহারের জন্য ছুরি, দা, বঁটিতে ধার দিয়ে রাখুন।
* কোরবানির মাংস সমভাবে বণ্টনের জন্য আগে থেকে দাঁড়িপাল্লা জোগাড় করে রাখুন।
* মাটিতে পড়ে থাকা পশুর রক্তে ছিটানোর জন্য ব্লিচিং কিনে রাখুন।
* জবাই করার আগে পশুকে ভালোভাবে গোসল করাতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়াতে হবে। এতে চামড়া ছাড়ানো সহজ হয়।
* পশু মাটিতে শোয়ানোর সময় লক্ষ করতে হবে দেহে যেন কোনো প্রকার চোট না লাগে। এতে চামড়া থেঁতলে অথবা ছিড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
* চামড়া ছাড়ানোর জন্য মাথা বাঁকানো অর্থাৎ ইংরেজি ‘ইউ’ অক্ষর আকারের ছুরি ব্যবহার করতে হবে।
* কোরবানির পশু বাড়ির পাশে ফাঁকা জায়গায় জবাই করুন।
* জবাই করার পর রক্ত, মলমূত্র, হাড়, বর্জ্য ইত্যাদি যেখানে-সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখবেন না। এতে পরিবেশ দূষিত হবে।
* পশুর রক্ত ও বর্জ্য মাটির গর্তে পুঁতে ফেলুন।
* রক্ত ছড়িয়ে থাকা স্থানে পানি দিয়ে ধুয়ে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দিন।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন